১৯৮৭ সালের ৯ মে বাংলাদেশের বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন মুশফিকুর রহিম। ২০০৫ সালের ২৬ শে মে বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের টেস্ট ম্যাচে ইংল্যান্ড সফরের জন্য তাকে স্কোয়াডে রাখা হয়। এবং বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের ওই টেস্ট ম্যাচ দিয়েই মুশফিকুর রহিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়। পরবর্তী বছর, অর্থাৎ ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট ও ডি আই ক্রিকেট, এবং একই বছর ২০০৬ সালের ২৮ শে নভেম্বর টি টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক সকল ফরম্যাটে মুশফিকুর রহিমের অভিষেক হয়।
মুশফিকুর রহিম
মুশফিকুর রহিম। যিনি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় এবং জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক সহ অধিনায়ক ছিলেন। এমনকি তিনি মুল অধিনায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন। মুশফিকের পুরো নাম মুহাম্মদ মুশফিকুর রহিম। ডাকনাম ‘মিতু’। তবে মিতু নামের থেকে মুশি বা মুশফিক নামেই তিনি বেশি পরিচিত। উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। ডানহাতে ব্যাট করেন। তবে ব্যাটিং এর থেকে তাকে স্ট্যাম্পের পেছনেই তাকে বেশি দেখা যায়। ছোট-খাট প্রাণবন্ত এই ছেলেটাকে উইকেটের পেছন থেকে চিৎকার চেঁচামিচির জন্য ক্রিকেট প্রেমিরা বেশি চিনে! তিনি একজন সফল উইকেট রক্ষক।
তিনি একজন সফল বাংলাদেশি অধিনায়ক, যিনি তিন ফরম্যাটেই দারুনভাবে অধিনায়কত্ব করেছেন। তবে টেস্টের জন্য তাকে সেরা এবং সফল অধিনায়ক ধরা হয়। মুশফিকুর রহিমের হাত ধরেই বাংলাদেশের ইতিহাস বদল হয়েছে। তিনিই একমাত্র বাংলাদেশি প্লেয়ার যে কি না তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন! এখন অবধি যা কেউ করতে পারেনি।
মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে শান্ত শিষ্ট, ভদ্র এবং মার্জিত একজন খেলোয়াড় খুঁজে থাকলে মুশফিকুর রহিম অন্যতম। ক্রিকেটে ঠান্ডা মেজাজের এমন ভদ্রলোক খুবই কম দেখা যায়। প্রাকটিসের সময় সালাত আদায়, ভালো রান করলে খোদার দরবারে শুকরিয়া স্বরুপ সিজদাহ্! এরকম দারুণ দারুণ সব কাজের জন্য মুশফিকুর রহিম অনেকের কাছে আইডল। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে মুশফিকুর রহিমের পরিসংখ্যান জেনে আসি..
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিম-এর পরিসংখ্যান
মুশফিকুর রহিম। যিনি একজন সফল বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান। ব্যাট হাতে রান সংগ্রহ করতে তিনি বেশ দক্ষ। ব্যাট হাতে তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন অসংখ্যবার। ব্যাট হাতে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে ইতিহাসের এক অবিশ্বাস্য রেকর্ড করেছিলেন মুশফিকুরকুর রহিম। তিনিই একমাত্র প্রথম বাংলাদেশি খেলোয়াড়, যিনি টেস্ট ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন!
মুশফিকুর রহিমের পুরো ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান
টেস্ট | ও ডি আই | টি-টোয়েন্টি | |
ম্যাচ | ৯০ | ২৭১ | ১০২ |
ইনিংস | ১৬৬ | ২৫৩ | ৯৩ |
রান | ৫,৮৯২ | ৭,৭৯২ | ১৫০০ |
সর্বোচ্চ | ২১৯ | ১৪৪ | ৭২ |
গড় | ৩৮.৭৬ | ৩৬.৭৫ | ১৯.২৩ |
স্ট্রাইক রেট | ৪৮.২৬ | ৭৯.৭৫ | ১১৪.৯৪ |
নট আউট | ১৪ | ৪১ | ১৫ |
চার | ৬৯৬ | ৬১৭ | ১২৬ |
ছক্কা | ৩৫ | ১০০ | ৩৭ |
ডাক | ১২ | ১১ | ৮ |
হাফ সেঞ্চুরি | ২৭ | ৪৯ | ৬ |
সেঞ্চুরি | ১১ | ৯ | ০ |
ডাবল সেঞ্চুরি | ৩ | ০ | ০ |
টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিম-এর পরিসংখ্যান
২৮ নভেম্বর, ২০০৬ শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে ম্যাচ দিয়ে টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় মুশফিকুর রহিমের। ১৫ নাম্বার ক্যাপ দিয়ে তাকে বরন করে নেয়। ম্যাচটিতে বাংলাদেশ ৪৩ রানের এক দারুন জয়লাভ করে।
মোট ম্যাচ | ১০২ |
মোট রান | ১৫০০ |
গড় | ১৯.২৩ |
সেঞ্চুরি (১০০) | ০ |
হাফ সেঞ্চুরি (৫০) | ৬ |
সর্বোচ্চ রান | ৭২* |
ক্যাচ | ৪২ |
স্ট্যাম্পিং | ৩০ |
ওডিআই ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিম-এর পরিসংখ্যান
৬ আগস্ট ২০০৬ সালে হারারে স্পোর্টস ক্লাব স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে ম্যাচ দিয়ে ও ডি আই ক্রিকেটে অভিষেক হয় মুশফিকুর রহিমের। ৮০ নাম্বার ক্যাপ দিয়ে তাকে বরন করে নেয়।
মোট ম্যাচ | ২৭১ |
মোট রান | ৭,৭৯২ |
গড় | ৩৬.৭৫ |
সেঞ্চুরি (১০০) | ৯ |
হাফ সেঞ্চুরি (৫০) | ৪৯ |
সর্বোচ্চ রান | ১৪৪ |
ক্যাচ | ২২৪ |
স্ট্যাম্পিং | ৫৫ |
টেস্ট ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিম-এর পরিসংখ্যান
২৬শে মে, ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের লর্ডস শহরে বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিমের অভিষেক হয়। ৪১ নাম্বার ক্যাপ দিয়ে তাকে বরন করে নেয়। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে মুশফিক ই প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড করেন।
মোট ম্যাচ | ৯০ |
মোট রান | ৫,৮৯২ |
গড় | ৩৮.৭৬ |
সেঞ্চুরি (১০০) | ১১ |
হাফ সেঞ্চুরি (৫০) | ২৭ |
সর্বোচ্চ রান | ২১৯* |
ক্যাচ | ১১০ |
স্ট্যাম্পিং | ১৫ |
মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরি কয়টি
মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশে ক্রিকেট জাতীয় দলের তিনিই একমাত্র ব্যাটিং যিনি এক থেকে ছয় পর্যন্ত যে কোনো পজিশনে অনায়াসে ব্যাটিং করতে পারেন! ২৬ শে মে ২০০৫ সালে বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের টেস্ট ম্যাচে অভিষেক হওয়ার পর থেকে মুশফিক একের পর এক জয় এনে দিয়েছেন দলকে। হাঁটুগেড়ে বসে চক্কা হাঁকানোর দারুণ এক অভিনব কৌশল জানেন তিনি, যা ক্রিকেট ফ্যানরা আজীবন মনে রাখবে।
মুশফিকুর রহিমকে রান সংগ্রহের মেশিন বলা যায়! রান হিসাবের পরিসংখ্যান করতে বসলে তার হাফ সেঞ্চুরি, ফুল সেঞ্চুরির তথ্য সবার সামনে দেখ যায়।
ফরম্যাট | হাফ সেঞ্চুরি (৫০) | সেঞ্চুরি (১০০) | ডাবল সেঞ্চুরি (২০০) |
টি টোয়েন্টি | ৬ | ০ | ০ |
ও ডি আই | ৪৯ | ৯ | ০ |
টেস্ট | ২৭ | ১১ | ৩ |
মোট | ৮২ | ২০ | ৩ |
মুশফিকের রহিমের অধিনায়কত্ব
২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত টানা চার বছর মুশফিকুর রহিম অধিনায়কত্ব করেছেন। ২০১১ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব কাধে তুলে নেন। দলকে চালানোর এক দারুণ প্রতিভা ছিলে তার মধ্যে! তার হাত ধরেই বাংলাদেশ এশিয়া কাপে নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে খেলেছিলো এবং ফলাফল হিসেবে সেইবার এশিয়া কাপ রানারস-আপ হয়।
আরো পড়ুন: কোন দেশ কতবার বিশ্বকাপ নিয়েছে
তিন ফরম্যাটেই মুশফিক অধিনায়ক ছিলেন। তবে আলাদা করে বলতে গেলে টেস্টে মুশফিকের অধিনায়কত্বের বীরত্বের কথা তো এখনো সবার মুখে লেগে আছে। মুশফিকের বিচক্ষণতায় টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করে বিরাট এক ইতিহাস লেখে।
মুশফিকুর রহিমের রেকর্ড
মুশফিকুর রহিমের ব্যক্তিগত জীবন
বাংলাদেশ জাতীয় দলের একজন সফল ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। তার বাবার নাম মাহবুব হাবিব এবং তার মাতার নাম রহিমা খাতুন। মুশফিক বগুড়া জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক শেষ করেন। ক্রিকেট খেলার সময়, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস অধ্যয়নরত ছিলেন। ২০১২ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি পরীক্ষায় বসেছিলেন মুশফিক। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে তিনি জান্নাতুল কিফায়াতকে বিয়ে করে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন।
মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরি- ৩টি
আমাদের সাথে থাকুন।
স্বাধীন স্পোর্টস (Sadhin Sports)